১. ম্যাক্সওয়েলের তড়িৎচুম্বকীয় বর্ণালী
বিকিরণ অঞ্চলের তালিকা:
- মহাজাগতিক রশ্মি: < 0.00005 nm
- গামা রশ্মি: < 0.01 nm
- রঞ্জন রশ্মি: 0.01 - 10 nm
- অতিবেগুনি রশ্মি: 10 - 380 nm
- দৃশ্যমান আলো: 380 - 780 nm
- অবলোহিত রশ্মি: 780 nm - 1 mm
- মাইক্রোওয়েভ: 1 mm - 1 m
- রেডিও তরঙ্গ: 1 mm - 10 km
গুরুত্বপূর্ণ সূত্র:
- v = f * λ (যেখানে v = আলোর বেগ, f = কম্পাঙ্ক, λ = তরঙ্গদৈর্ঘ্য)
- v (বেগ) তরঙ্গদৈর্ঘ্যের (λ) সমানুপাতিক
- λ (তরঙ্গদৈর্ঘ্য) কম্পাঙ্কের (f) ব্যস্তানুপাতিক
২. দৃশ্যমান আলোর বর্ণালী (বেনীআসহকলা)
তরঙ্গদৈর্ঘ্য অনুযায়ী আলোর বিভিন্ন রঙ:
- বে (বেগুনী): 380 nm
- নী (নীল): 424 nm
- আ (আসমানী): 450 nm
- স (সবুজ): 500 nm
- হ (হলুদ): 575 nm
- ক (কমলা): 590 nm
- লা (লাল): 647 - 780 nm
সাধারণ তথ্য:
- তরঙ্গদৈর্ঘ্য (λ) কম হলে বিচ্যুতি (deviation) বেশি হয়।
- তরঙ্গদৈর্ঘ্য (λ) বেশি হলে শক্তি (energy) কম হয় এবং বিচ্যুতিও কম হয়।
৩. পদার্থের গঠন ও বর্ণালী
আণবিক বর্ণালী সম্পর্কিত বিষয়সমূহ:
- আবর্তন (Rotation)
- কম্পন (Vibration)
- ইলেকট্রন (Electronic Transitions)
- NMR (Nuclear Magnetic Resonance)
- ESR (Electron Spin Resonance)
বর্ণালীর প্রকারভেদ:
- পারমাণবিক বর্ণালী:
- উদাহরণ: H2 (দ্বি-পরমাণুক), NaCl (শোষণ)
- আণবিক বর্ণালী: বিকিরণ বর্ণালী
- নিরবিচ্ছিন্ন বর্ণালী: শুদ্ধ বর্ণালী
৪. শিখা পরীক্ষা (Flame Test)
বিভিন্ন মৌলের বৈশিষ্ট্যপূর্ণ শিখার রঙ ও তরঙ্গদৈর্ঘ্য:
- কোবাল্ট (Co): লাল (616 nm)
- সোডিয়াম (Na): সোনালী (590 nm)
- হাইড্রোজেন (H): ৪টি রেখা (নীল-৩, লাল-১)
- বেরিয়াম (Ba): সবুজ (578 nm)
- স্ট্রনসিয়াম (Sr): আসমানী, লাল
- বেরিলিয়াম (Be), ম্যাগনেসিয়াম (Mg): শিখা পরীক্ষায় বর্ণহীন বা বৈশিষ্ট্যপূর্ণ রঙ দেয় না।
৫. হাইড্রোজেন বর্ণালী সিরিজ
হাইড্রোজেন বর্ণালীর বিভিন্ন সিরিজ:
| সিরিজ | বিকিরণ অঞ্চল | n1 (নিম্ন শক্তিস্তর) | n2 (উচ্চ শক্তিস্তর) |
|---|---|---|---|
| লাইমেন (Lyman) | অতিবেগুনি (UV) | 1 | 2, 3, 4, 5, 6... |
| বামার (Balmer) | দৃশ্যমান | 2 | 3, 4, 5, 6, 7... |
| প্যাশ্চেন (Paschen) | অবলোহিত (IR) | 3 | 4, 5, 6, 7, 8... |
| ব্রাকেট (Brackett) | অবলোহিত (IR) | 4 | 5, 6, 7, 8, 9... |
| ফুন্ড (Pfund) | অবলোহিত (IR) | 5 | 6, 7, 8, 9, 10... |
| হামফ্রেস (Humphreys) | অবলোহিত (IR) | 6 | 7, 8, 9, 10, 11... |
উদাহরণ: ইলেকট্রন যদি n2 = 100 থেকে n1 = 2 শক্তিস্তরে স্থানান্তরিত হয়, তবে বামার সিরিজের দৃশ্যমান আলো বিকিরিত হবে।
৬. শোষণ বর্ণালী (UV) এবং ঘনত্বের সম্পর্ক
UV শোষণ রেঞ্জ:
- 230 - 375 nm
ঘনত্বের সাথে রঙের পরিবর্তন (ফসফোর):
- 5 ইউনিট ঘনত্ব: নীল
- 10 ইউনিট ঘনত্ব: লাল
- 20 ইউনিট ঘনত্ব: সবুজ
- 50 ইউনিট ঘনত্ব: হলুদ
- 100 ইউনিট ঘনত্ব: কমলা
ফসফোর: যে পদার্থ আলো শোষণ করে পরে ধীরে ধীরে আলো বিকিরণ করে।
৭. MRI / NMR (নিউক্লিয়ার ম্যাগনেটিক রেজোন্যান্স)
NMR এর মূলনীতি:
- NMR সক্রিয় নিউক্লিয়াস (যেমন: ¹H, ¹³C, ¹⁹F) একটি শক্তিশালী চৌম্বক ক্ষেত্রে স্থাপন করা হয়।
- রেডিও তরঙ্গ প্রয়োগ করা হলে এই নিউক্লিয়াসগুলো শক্তি শোষণ করে এবং একটি নির্দিষ্ট কম্পাঙ্কে পুনরায় শক্তি বিকিরণ করে (Response)।
- এই বিকিরিত তরঙ্গ বিশ্লেষণ করে পদার্থের গঠন সম্পর্কে তথ্য পাওয়া যায়।
মানবদেহে প্রয়োগ (MRI):
- মানবদেহের 70% পানি (H2O) থাকে, যা প্রচুর পরিমাণে ¹H (প্রোটন) ধারণ করে।
- MRI (Magnetic Resonance Imaging) এই প্রোটনগুলোর চৌম্বকীয় বৈশিষ্ট্য ব্যবহার করে দেহের ভেতরের টিস্যু এবং অঙ্গপ্রত্যঙ্গের বিস্তারিত ছবি তৈরি করে।
৮. দ্রাব্যতা এবং দ্রাব্যতা গুণফল (Ksp)
দ্রাব্যতা:
- একটি নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় (যেমন: 25°C) 100 গ্রাম দ্রাবকে যত গ্রাম দ্রব দ্রবীভূত হয়ে সম্পৃক্ত দ্রবণ তৈরি করে, তাকে ওই দ্রবের দ্রাব্যতা বলে।
- প্রক্রিয়া: দ্রব + দ্রাবক ⇌ দ্রবণ (তাপমাত্রা দ্বারা প্রভাবিত)
- উদাহরণ: AgCl (সিলভার ক্লোরাইড) একটি স্বল্পদ্রাব্য লবণ।
দ্রাব্যতা গুণফল (Ksp):
- কোনো স্বল্পদ্রাব্য লবণের সম্পৃক্ত দ্রবণে এর উপাদান আয়নগুলির ঘনমাত্রার গুণফলকে দ্রাব্যতা গুণফল বলে।
- Ksp = [Ag+] x [Cl-] (AgCl এর জন্য)
- এটি একটি ধ্রুবক মান যা শুধুমাত্র তাপমাত্রার উপর নির্ভরশীল।
আয়নিক গুণফল (ip):
- সম্পৃক্ত বা অসম্পৃক্ত যেকোনো দ্রবণে আয়নগুলির ঘনমাত্রার গুণফল।
- যদি ip > Ksp হয়, তবে অধঃক্ষেপ পড়বে।
- যদি ip < Ksp হয়, তবে আরও দ্রব দ্রবীভূত হবে।
- যদি ip = Ksp হয়, তবে দ্রবণটি সম্পৃক্ত অবস্থায় আছে।
৯. লবণের মূলক শনাক্তকরণ (শুদ্ধ পরীক্ষা)
লবণে ক্ষারীয় মূলক (Cation) শনাক্তকরণের জন্য ব্যবহৃত কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা:
- শিখা পরীক্ষা: নির্দিষ্ট মৌলের উপস্থিতিতে শিখার বৈশিষ্ট্যপূর্ণ রঙ।
- কোবাল্ট নাইট্রেট পরীক্ষা: অ্যালুমিনিয়াম, জিঙ্ক, ম্যাগনেসিয়াম ইত্যাদি মূলকের জন্য ব্যবহৃত হয়।
- পটাশ পরীক্ষা: অ্যামোনিয়াম মূলক শনাক্তকরণে ব্যবহৃত হয়।
- বোরক্স গুটি পরীক্ষা: ট্রানজিশন মেটাল যেমন কপার, নিকেল, কোবাল্ট ইত্যাদির জন্য।
- অম্লীয় পরীক্ষা: নির্দিষ্ট অম্লের সাথে বিক্রিয়া করিয়ে মূলক শনাক্তকরণ।
- চারকোল বিজারণ পরীক্ষা: লেড, সিলভার, বিসমাথ ইত্যাদির জন্য।